ল্যাপটপ স্লো হলে কি করব?

ল্যাপটপ স্লো হলে কি করব?

ল্যাপটপ স্লো হলে কি করব?

বর্তমান সমায়ে ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ছাড়া যেনো পৃথিবীই অচল। কারণ, কথাটার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই পৃথিবীতে যতো রকমের কাজ আছে তা সমাধান করার জন্য ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সানিধ্য আসতে হয়।

বর্তমান সমায়ে বেকার যুবকদের আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য অনলাইনে নানারকম ইনকাম করার সাইট তৈরি হয়েছে। আর বেকার যুবকরা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে উক্ত কাজগুলো করে ক্যারিয়ার গঠন করছে।

আজকের যুগে স্কুল কলেজর বেঞ্চে বসে লেখাপড়া করার দিন ফুরিয়ে এসেছে। এখন লেখাপড়া করার মাধ্যম হচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক। বাবা-মা কখনো চায় না তাদের ছেলে-মেয়ে পিছিয়ে পড়ুক। তাই তারা অর্থ ব্যায়ে ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার কিনে দিচ্ছে। আর সেটি ব্যবহার করে যেনো তাদের ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করতে পারে।

যদি আপনি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিংবা সাধারণ কাজ করেন এমন সময় যদি আপনার ল্যাপটপটি স্লো হয়ে যায়। তাহলে এমন পরিস্থিতিতে আপনার ভালো থাকার কথা নয়। কারণ, আমি নিজেই এই সমস্যাটির সম্মুখীন হয়েছিলাম।

এমন পরিস্থিতিতে দেখা যায় কেউ কেউ আবার রাগ সামলাতে না পেরে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের উপর টর্চার করে। আর ভাই সবুর করুন এতো অধৈর্য হলে তো হবে না। কারণ, লসটি কিন্তু আপনারই হচ্ছে।

তাই আমি আজকের আর্টিকেলে বলার চেষ্টা করবো। আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারটি যেনো স্লো থেকে ফাস্ট করা যায় সে বিষয় নিয়ে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাকঃ

ল্যাপটপ স্লো হাওয়ার কারন

ল্যাপটপ স্লো হাওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। ল্যাপটপ স্লো হাওয়ার প্রধান কারন গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে র‍্যাম কম থাকা। এসএসডির বিপরীতে হার্ডডিক্স ব্যবহার করলে ল্যপটপ স্লো হয়ে যাবে। আবার দূর্বল প্রসেসর ব্যবহারের কারনেও ল্যপটপ স্লো হয়ে যেতে পারে।

স্লো ল্যাপটপ ফাস্ট করার উপায়

  • র‍্যাম আপগ্রেড করুন

আমি সাজেস্ট করবো র‍্যাম কমপক্ষে ৮ জিবি পর্যন্ত ব্যবহার করুন। ভাই অবাগ হাওয়ার কিছু নাই। কারণ,র‍্যাম তো আপনি কম্পিউটার গতি বৃদ্ধি করার জন্যই তো ব্যবহার করতেছেন। কিছু মানুষ আছে তারা বলে যে, আমি শুধু বেসিক কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি। আমার আবার ৮ জিবি র‍্যাম ব্যবহার করার কি দরকার? বলটা যতোটা সহজ ভাবছেন কাজে কিন্তু তা প্রমান করতে পারবো না।

একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলি। এই যে আপনি বেসিক কাজের জন্য কম্পিউটারটি ব্যবহার করছেন। আচ্ছা আপনি বলুন তো? আপনি কি ভিডিও এডিটিং, ফটোশপ, ইন্টারনেট ব্রাউজিং ইত্যাদি কাজগুলো করেন? উত্তর হ্যাঁ হবে। ব্রাউজার যে ব্যবহার করবেন সেখানে তো ফায়ার ফক্স র‍্যাম খেয়ে ফেলছে। ফটোশপ, ভিডিও এডিটিং করার জন্য সেখানে মিনিমাম ২জিবি র‍্যাম খেয়ে ফেলছে। আবার এদিকে টুকটাক কাজের জন্য র‍্যাম খেয়ে ফেলছে। তাই আমি বলি আপনি মিনিমাম ৮জিবি পর্যন্ত র‍্যাম ব্যবহার করুন।

৪ জিবি থেকে ৮ জিবিতে উন্নতি করলে খরচ হতে পারে ২,১০০টাকার মতো। আর এর পারফরমেন্স তো ব্যবহার করার পর তো বুঝতেই পারবেন।

  • এসএসডি সংযোজন করুন

এসএসডি বা সলিড স্টেট ড্রাইভার কম্পিউটারে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। আপনার কম্পিউটার যদি স্লো হয়ে যায় তাহলে আপনি এসএসডি হার্ডডিক্স সংযোজন করুন। এসএসডি সবকিছুই দ্রুত বা ফাস্ট করে তোলে যেমনঃ শাট ডাউন, প্রোগ্রাম চালু, বুট করা ইত্যাদি।

আপনি চাইলে ভালো মানের এসএসডি ক্রয় করে ল্যপটপ বা কম্পিউটারে সংযোজন করতে পারেন।

  • রিসাইকল ফোল্ডার ক্লিন করুন

অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আপনারা রিসাইকল ফোল্ডারে জমা করে রাখেন কিন্তু রিসাইকল ফোল্ডার ক্লিন করার মনে থাকে না। এতে করে কিন্তু অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো থাকার কারনে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপটি ধীরগতি হয়ে যাচ্ছে। তাই সবসময় রিসাইকল ফোল্ডার ক্লিন করবেন।

  • টেম্প এবং রিফ্রেশ ফাইল গুলো ডিলিট করুন

আপনার ল্যপটপ বা কম্পিউটারে এমন অনেক ফাইল রয়েছে যা আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের গতি স্লো করে দেয়। তাই আপনার উচিত এসব ফাইল ডিলিট করা। এজন্য আপনাকে টেম্প ফাইলে যেতে হবে। সেখানে থাকা অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ডিলিট করে দিতে হবে। এবং শেষে রিফ্রেশ ফ্লোডারে গিয়ে ডিলিট করে দিতে হবে।

এর জন্য কয়েকটি স্টেপ ফলো করতে হবেঃ
১. Windows+R বাটন ক্লিক করতে হবে।
২. Run এ ‘temp’ লিখে Ok ক্লিক করতে হবে।
৩. এই ফোল্ডারে temp থাকা সব গুলো ফাইল ডিলিট করে দিতে হবে।

৪. পরবর্তীতে Windows+R বাটন ক্লিক করে ডায়লগ বক্সে “prefetch”‘ লিখতে হবে এবং সব ফাইল ডিলিট করে দিতে হবে।
৫. Recycle Bin আসতে হবে,এবং সেখানে জমে থাকা সব ফাইল ডিলিট করে দিতে হবে।
উপরোক্ত কাজ গুলো করলে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপটি অনেকটা ফ্রী ও ফাস্ট হয়ে যাবে।

  • Start Up ফাইলে থাকা অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো Disable করুন

আপনি যখন আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারটি ওপেন করেন তখন দেখে থাকবেন কিছু কিছু প্রোগ্রাম চালু হয়ে যায় আপনা আপনি। আপনি জানেন কি? এসব অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার স্লো করতে পারে। তাই এসব অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো গুলো ডিসএবেল করে দিন। ডিসএবেল করার জন্য কয়েকটি স্টেপ ফলো করুন।

১. Windows+R বাটন ক্লিক করুন।
২. একটি ডায়লগ বক্স দেখতে পারবেন। সেখানে “msconfig” লিখে ইন্টার বাটন কিংবা Ok ক্লিক করুন।
৩. system configuration নামে একটি ফোল্ডার দেখতে পাবেন।
৪. এবার আপনি “Startup” ক্লিক করুন।
৫. এখন “open task manager” অপশন প্রেস করুন।
৬. এখন আপনি দেখতে পাবেন আপনার কম্পিউটার চালু করার সমায় যেসব অ্যাপ্লিকেশন দেখতে পান তার চার্ট। যেগুলো প্রয়োজনীয় সেসব রেখে অপ্রয়োজনীয় গুলো ডিসএবেল করে দিন।

‘Apply’ অপশনে ক্লিক করে ‘ok’ এ অপশনে ক্লিক করুন। আর সেখান থেকে বের হয়ে আসুন। আর একটি কাজ হলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কে ‘Restart’ করে নিন। তাহলে দেখা যাবে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ অনেক ফাস্ট হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ কিভাবে পুরাতন এবং স্লো অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি আবার ফাস্ট করবেন?

ডিক্স ক্লিনআপ করুন

কম্পিউটার অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো বেশি ক্ষতি করে। অলসতা না করে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপকে ফাস্ট রাখার জন্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ক্লিন করুন। এই অপশনটি আপনি my computer/file explorer পেয়ে যাবেন। নিচে দেওয়া স্টেপগুলো ফলো করুন।
১. my computer/file explore এর মধ্যে গিয়ে c-drive এর মধ্যে মাউসের ডান বাটন ক্লিক করুন। সেখানে ‘properties’ অপশনে ক্লিক করুন।
২. এ পর্যায়ে আপনি ‘Disk Cleanup’ ক্লিক করে ‘Ok’ বাটনে ক্লিক করুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সব মুছে যাবে।

তো এই ছিল আজকের আলোচনা। উপরের কাজগুলো করলে আপনার ল্যাপটপ ফাস্ট হতে বাধ্য। আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।


Post a Comment

0 Comments